The Indian Rover ( Issue : August , 2021)
গান্ধী একমাত্র নেতা নন - জয়দীপ গোস্বামী







Now a situation had arisen where we ( congress ) were becoming greater supporters of partition than Jinnah. I warned Jawaharlal that history would never forgive us if we agreed to partition ❞ । কংগ্রেসের অনেকেই এই Partition এর বিরোধী ছিলেন। আর জিন্নাহ বলেন উনি নাকি ভাবতে পারেন নি যে এতো সহজে তারা পৃথক রাষ্ট্র পেয়ে যাবেন। যদি নেতাজি দেশে অবস্থান করতেন তো কারোর সামর্থে কুলাতোনা দেশ কে বিভাজিত করার। গান্ধীজির সাথে নেতাজির মনের মিল কোনো দিনই ছিলো না। কারণ দুজনের মানসিকতা ভিন্ন, কর্মপন্থাও ভিন্ন। আর আমরা সবাই জানি যাদের সাথে গান্ধীজির মতের মিল হতো না তাদের তিনি সহ্য করতে পারতেন না। গান্ধীজিতো অনেক গুলো আন্দোলন করেছিলেন একটাও সফল হয়েছিলেন বা একবারের জন্যেও ইংরেজদের মনে ভীতির জাগরণ ঘটাতে পেরেছিলেন। নেতাজি পেরেছিলেন। তাই নেতাজিকেই যোগ্য নেতা মনে করা হয়। নেতাজি ২য় বিশ্বযুদ্ধের দাবদাহতার সুযোগ নিয়ে ইংরেজ দের পরাস্ত করার পরিকল্পনা করতে সিঙ্গাপুর যান । ১৯৪২ সালে রাসবিহারী বসুর তৎপরতায় জাপানি কতৃপক্ষ ভারতের জাতীয়তাবাদের পাশে দাঁড়ায় এবং যুদ্ধ বন্দী ভারতীয় দের মুক্ত করার সিদ্ধান্ত নেয়। ১৯৪২ সালের ২৮ ২৯ মার্চ টোকিও তে তার ডাকে অনুষ্ঠিত একটি সম্মেলনে ইন্ডিয়ান ইন্ডিপেন্ডেস লিগ গঠনের সিদ্ধান্ত হয়। আর ওই অধিবেশনে এক সেনাবাহিনীর গঠনের প্রস্তাব পেস করা হয়। যুদ্ধবন্দী ভারতীয় সেনাদের নিয়ে গঠিত হয় আজাদ হিন্দ ফৌজ, যাদের একমাত্র লক্ষ্য ছিলো ভারত মাতাকে মুক্ত করা। রাসবিহারী বসু এই আজাদ হিন্দ ফৌজের দায়িত্ব অর্পণ করলেন নেতাজিকে। ১৯৪৩ সালে সুভাষচন্দ্র বসুর নেতৃত্বে পুনর্গঠিত হয়ে সুভাষচন্দের আর্জি হুকুমত-এ-আজাদ হিন্দ সেনাবাহিনী গঠিত হয়। ব্রহ্মদেশ, ইম্ফল, কোহিমায় সাম্রাজ্য বাদী জাপান সেনাবাহিনীর সহায়তায় বাহীনি ব্রিটিশ ও কমনওয়েলথ বাহিনীর বিরুদ্ধে যুদ্ধাভিযান চালায়। এবং তাতে তাদের ব্যার্থতার সম্মুখীন হতে হয়। পরে প্রায় বেশিরভাগ সেনা কেই ভারতে ফিরিয়ে আনা হয়। পরে দেশদ্রোহীতার জন্য কারোর কারোর বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়। ফিরলেন না নেতাজি। নেতাজি সাহায্যের জন্য হিটলারের কাছে গিয়েছিলেন। কিন্তু হিটলার শক্তি দিয়ে নেতাজিকে সাহায্য করেন নি। গান্ধীজিও ভারতের স্বাধিনতা সংগ্রামের এক অপরিহার্য অঙ্গ তা নিয়ে কোন প্রশ্নই উঠেনা। তবে ওনার মতো উচু দরের নেতা স্বাধীনতা সংগ্রামরূপে যে প্রহসনের সৃষ্টি করেছিলেন তাতে যুব সমাজের মনে তাঁর প্রতি শ্রদ্ধা ও আনুগত্যের পরিমাণ কিছুটা হলেও খর্ব হয়েছিলো। যারা প্রকৃত উপায়ে সঠিক পন্থায় দেশকে স্বাধীন করার প্রচেষ্টা করতেন গান্ধীজি তাদেরকে আতঙ্কবাদী হিসেবে চিহ্নিত করতেন। যার ফলে জনসাধারণের মনে ক্ষোভ সৃষ্টি হতো। নেতাজি বরাবরই শক্তি বুদ্ধি দিয়ে ইংরেজ দের পরাস্ত করতে চাইতেন। তিনি বুঝতে পেরেছিলেন অহিংস পথে চুপচাপ নির্বিকার ভাবে বসে থেকে কোনদিনই স্বাধীনতা আসবেনা। তাই তিনি চাইতেন ইংরেজদের দমনপীড়নের বিরুদ্ধে সশস্ত্র আন্দোলন গড়ে তুলতে। কিন্তু তাঁর নিতির বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তোলা হয়। ব্রিটিশ পুলিশ তাঁকে অনেকবার বন্দী করে এবং বেশ কয়েকবার নেতাজিকে গৃহবন্দী করা হয়। পরে তিনি ইংরেজ পুলিশের চোখে ধূলো দিয়ে পালিয়ে যান আর শক্তিশালী হয়ে ইংরেজদের বিরুদ্ধে আক্রমণ করার জন্য। কিন্তু নেতাজি আর কোনোদিনই দেশের মাটিতে পা দেওয়া হলোনা। তাঁকে কী দেশে ফেরত আসতে দেওয়া হয়নি। ভয়ে! পাছে উনি দেশ ভাগে বাধা দিয়ে দেন। অগত্যা নেতাজিকে মৃত পরিণত করার একটা সুযোগ এসে গেলো তাদের কাছে, ১৯৪৫ সালের ১৮ই আগষ্ট তাইহুকু বিমানবন্দরে কাছে এক বিমান দুর্ঘটনার খবর পাওয়া যায়, সেই বিমানে নাকি সুভাষ বসু যাত্রী ছিলেন। কাছাকাছি একটা সেনা হাসপাতালে চিকিৎসারত অবস্থায় নাকি নেতাজির মৃত্যু হয়। তাইহুকুতে নেতাজির অন্তিম সংস্কার করা হয় । আর ওনার চিতাভষ্ম নাকি টোকিও এর একটি বৌদ্ধ মঠে রাখা হয়েছে। একটা ঘটনার প্রসঙ্গ উল্লেখ করা হলো- ‘ The nawab of Bhupal chattered a plane taking Jawaharlal Nehru to Singapore where Lord Wavell was ; he was then viceroy. Gen. Auchinleck, commander-in-chief of the war was also there. Nehru was hesitant there. Lord Mountbatten who was the head of the South East Asia command to Singapore base, was also there. Jawaharlal Nehru was given certain questions by Lord Mountbatten. He said, look here Scotland yard has not yet written off Subhas as dead or gone or disappointed never to came. If that is so, is Subhas comes back to India, will you be the prime minister or Subhas will be? Question no. 02: was supposing the country is not provide will Bengal contributed the Prime Ministership or will U.P contributed the Prime Ministership? The hint was very very clear and vacillating great leader agreed to PARTITION. ’ ( Lak Sabha Debates– vol. VII. Pages- 316 & 317). এর থেকেই প্রমাণিত হয় যে ইংরেজ সরকার ও ভয় পেতো যদি সুভাষ চন্দ্র বসু আবার দেশে না ফিরে আসে। যুদ্ধের পর যখন আজদ হিন্দ ফৌজের সেনাবাহিনীরা স্বেচ্ছায় ধরা দিয়ে দেশের মাটিতে পা রাখে এবং তাদের কথা যখন গোটা দেশ যুড়ে ছড়িয়ে পড়ে তখন গোটা দেশের আক্রোশ গিয়ে পড়ে ইংরেজ সরকারের ওপর, গোটা ভারতবর্ষ জুড়ে ব্রিটিশ বিরোধী আন্দোলন। এই ভয়াবহ বাতাবরণে সন্ত্রস্ত হয়ে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী ক্লিমেন্ট এটলি ১৯৪৭ সালের ফেব্রুয়ারীতে ঘোষণা করেন যে ১৯৪৮ সালের ৩০ এ জুন ভারতকে স্বাধীন করা হবে। কিন্তু প্রত্যেকটা নেতার মধ্যে ভয় যদি নেতাজি ফেরত আসে! তাই মাউন্টব্যাটেন নির্দেশ দেয় যে এবার দেশভাগের সিদ্ধান্ত মেনে নিতে। এবং তার পর স্বাধীনতার দিনটি এগিয়ে আনা হয়, ১৯৪৭ সালের ১৪ই ও ১৫ই আগষ্ট । আর এই ধারণা সত্যি হলো যখন তাইহুকুর সরকার জানালো যে ১৮ই আগষ্ট ১৯৪৫ কোনো বিমান দুর্ঘটনা হয়নি। তাই আরও তাড়াতাড়ি দেশ বিভাজন করে স্বাধীনতা দান করার হিড়িক পড়ে গিয়েছিল। নেতাজির সঠিক পরিণতি জানার জন্য দেশ বাসী সরকার কে চাপ দিতে থাকে যার ফলস্বরূপ সরকার দুটি তদন্তকারী কমিটি গঠন করে। কমিটি গুলি হলো শাহ নাওয়াজ কমিটি, খোসলা কমিটি ও মুখার্জি কমিশন। শাহ নাওয়াজ কমিটি ও খোসলা কমিটি বিমান দুর্ঘটনার মতকেই সত্য বলে আখ্যা দেয়। কিন্তু সাধারণ মানুষ এই মতামত মানতে রাজি হয় না। কারণ তাইওয়ান সরকার স্পষ্ট ভাবে জানায় যে ১৯ এ আগষ্টের ৭দিন আগে বা পরে কোনো বিমান দুর্ঘটনা হয় নি। উত্তাল জনতার আক্রোশের ফলে আবার একটি তদন্তকারী কমিটির, মুখার্জি কমিশন গঠন করা হয়। এই কমিশনের রিপোর্টে লেখা হয় যে ওই দিন কোনো বিমান দুর্ঘটনা হয়নি। এই মত সরকার মানতে পারেনি তাই এই কমিশনের রিপোর্ট এখনও প্রকাশিত হয়নি। আর এই ব্যার্থতার পেছনে তৎকালীন তাবড়-তাবড় নেতাদের ক্ষমতা লোভের স্পৃহা নিহিত রয়েছে। তাহলে এই মহান দেশমাতৃকার প্রকৃত নেতা কে? কথায় আছে মানুষের পাপের ঘড়া যখন পুর্ণ হয় তখন তার বিনাশ অবসম্ভাবী হয়ে যায়। না পাপের ঘড়া আরও কিছুটা পূর্ণ হওয়ার ছিলো। ভারতবর্ষ দুটি ভাগে ভাগ হলো। আমরা গান্ধীজির মুখে অনেকবার শুনেছি উনি মুসলিম দের আশস্ত্ব করতেন যে ওনার থেকে মুসলিম দের কোনো ভয় হবে না। যার ফলেই তারা নানান সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা সৃষ্টি করার সুযোগ আর সাহস পেয়েছিল। সেই সব থাক। দেশভাগের আগে কংগ্রেস আস্বাস দেয় যে ভারত পাকিস্তানকে ৫৫কোটি টাকা দেবে। কিন্তু পরবর্তী কালে প্যাটেল নেহেরু প্রমুখ নেতারা সেই টাকা দিতে অস্বীকার করে। পাকিস্তান কে ৫৫কোটি টাকা পাইয়ে দেওয়ার জন্য গান্ধীজি অনশনে বসেন এবং কংগ্রেস ৫৫কোটি টাকা দিতে বাধ্য হয়। কংগ্রেসের ভয় ছিলো যে ওই ৫৫ কোটি টাকা দিয়ে অস্ত্রশস্ত্র কিনে ভারতের বিরুদ্ধে আক্রমণ চালাবে আর সেটাই হয়। তাহলে কী গান্ধীজি পাকিস্তান জাতির জনক! প্রত্যেকটা মানুষেরই অন্ত নিশ্চিত। নাথুরাম গোডসে ১৯৪৮ সালের ৩০ এ জানুয়ারি গান্ধীজিকে গুলিবিদ্ধ করে হত্যা করেন, এবং গান্ধী হত্যার অপরাধে তাঁকে গ্রেফতার করা হয়। ওনার যখন সাজা চলছিলো উনি ওনার কর্মকাণ্ডের সম্পুর্ন ব্যাখ্যা দেন। এমনকি উনি গান্ধী তথা কংগ্রেস ও মুসলিম লীগের কার্যকলাপের ব্যাখ্যা করেছেন। ২০ জানুয়ারি গান্ধীর সভায় বোম মারার ঘটনার অপরাধে মদনলাল গ্রেফতার হন। গোডসে গান্ধী হত্যার অপরাধের বিচার চলা কালীন বয়ানে বলেন ৩০ এ জানুয়ারি ঘটনার একমাত্র দায় ওনার, উনি আর কারোর সাথে ষড়যন্ত্র করেননি বা কারোর সহায়তা নেননি। তিনি আরও বলেন তিনি কীভাবে আর কীকারণে দিল্লি এসেছিলেন। তিনি বলেন তিনি গান্ধীজির ভাবধারার বিরোধিতা করতেন এবং তা সর্বসমক্ষে ছড়িয়ে দিতেন। গোডসে বলেন এই অহিংসার ধর্ম জাতির দুর্বলতার কারণ হয়ে দাঁড়াবে। তিনি চিন্তা করেন যে তাঁর মতো মনের মানুষদের নিয়ে একটা সংগঠন গঠন করা দরকার এবং তিনি বলেন গান্ধীজী মুসলমানদের পক্ষপাতি ছিলেন এবং ওনার সিদ্ধান্ত গুলিতে হিন্দুজাতির দুর্দশার কমার বদলে বেড়ে যাচ্ছিলো। তিনি বলেন তিনি তাঁর কথার যথাযথ ব্যাখ্যা করবেন এবং কীভাবে গান্ধীজি হিন্দুজাতির কাছে কালোছায়ার ন্যায় নেমে আসছিল তা তিনি বিস্তারিত আলোচনা করেন। নাথুরাম গোডসে বলেন “ ১৬ মে তে অগ্রণী পত্রিকাতে আমি গান্ধীজির বিচারধারা গুলির তীব্র সমালোচনা করি। নিজের লক্ষ্য পুরণের জন্য অনশন গুলোর বিরুদ্ধেও কড়া সমালোচনা করি, পার্থনা সভাতে যখন তাঁর বিকৃত রাজনৈতিক বিচার ধারার প্রকাশ করা আরম্ভ করেন, তখন আমি আর শ্রী আপ্তে চিন্তাভাবনা করি যে আমরা গান্ধীজির বিচারধারার বিরুদ্ধে শান্তিপূর্ণ বিরোধ করবো। আমরা এই বিরোধিতা পুনে, বোম্বাই, দিল্লিতেও করি। আমাদের আর গান্ধীজির চিন্তাভাবনার মধ্যে তীব্র অন্তর রয়েছে। গান্ধীর মত অনুযায়ী মুসলিমদের অধিক সুবিধা প্রদান করতে হবে। কংগ্রেস ১৯৪৭ সালের ১৫ আগষ্ট দেশবিভাজন স্বীকার করে তখন মতভেদ আরও বেড়ে যায়। ১৩ জানুয়ারি ১৯৪৮ সালে গান্ধীজি আরও একটা অনশন করার মনোস্থির করেন। যার উদ্দেশ্য ছিলো ভারতীয় প্রজাতন্ত্রে হিন্দু-মুসলিম সম্পর্ক ভালো করা। যার আসল উদ্দেশ্য ছিলো পাকিস্তান কে ৫৫ কোটি টাকা দেওয়া। এই বিষয়ে আপ্তে মত দেন যে গান্ধীর সভাতে বিরোধ সৃষ্টি করতে হবে। আমি তো এই প্রস্তাবে রাজি তো হয়ে গেলাম কিন্তু জানতাম এই কার্যে সিদ্ধিলাভ হবে না এবং আমরা বোম্বে যাই। সেখানে এক শরনার্থীর সাথে দেখা হয়, যে পিস্তল বিক্রি করে। সেই একটা পিস্তল দেখায়। আর ওই পিস্তলটি ভালো লেগে যায় এবং তা কিনে নিই। যে পিস্তল দিয়ে গান্ধীজিকে হত্যা করি এটা সেই পিস্তল।” তিনি আরও বলেন তিনি মোট ২৬দিন বোম্বাইতে কাটান। অনেকে তাঁকে বলেন নাকি বীর সাভারকার তাঁর মার্গ দর্শন করান। যদি এটা সত্যি হতো তাহলে উনি গান্ধীপন্থী হতেন, তা তিনি হননি। তাই তিনি তা মানতে রাজি নন। সত্যহীন ন্যায়হীন তথ্যের প্রতিরোধ করেন। অভিযাজকের মতে তিনি নাকি সাভারকারের হাতের পুতুল ছিলেন। গোডসে ব্রাহ্মণ বংশে জন্মগ্রহণ করেন। ব্রাহ্মণ হওয়ার দরুন উনি নিজেকে হিন্দু বলে গগর্ববোধ করতেন। হিন্দু জাতির ইতিহাস ও সংস্কৃতির প্রতি সন্মান বরাবরই ছিলো। তিনি কট্টরপন্থী হিন্দুত্ববাদের বিরোধী ছিলেন ,তিনি জাতপাত মানতেন না, জন্মাতর ভিত্তিক জাতিপ্রথার বিরোধী ছিলেন। তিনি মনে করতেন সনাতন ধর্মালম্বী প্রত্যেক হিন্দুই সমান। তাদের একই দৃষ্টিকোণে দেখা উচিত। গোডসে দাদাভাই নৌরজি, গোখলে ও স্বামী বিবেকানন্দ এর মতো জীবনি পড়েন। রুশ ও ইংল্যান্ডের ইতিহাস পড়েন, কমিউনিসম এর বই পড়েন। সবথেকে বেশি গুরুত্ব দেন ভীর সাভারকার ও গান্ধীজির সাহিত্যগ্রন্থ পড়ে অনুপ্রাণিত হন। আধুনিক ভারত গত ৫০ বছর ধরে এনাদের প্রভাবে পরিচালিত হয়েছে। গোডসে বলেন, সাহিত্যগ্রন্থ গুলো পড়া ও ওনাদের চিন্তাভাবনার ফলে আমার অনুভুতি হলো যে দেশভক্ত হওয়ার দরুন আমার প্রধান কর্তব্য হলো হিন্দু জাতির রক্ষা করা, কারণ ৩০ কোটি হিন্দুর স্বতন্ত্রতা ও অধীকার গুলির রক্ষা করা সমগ্র সংসারের পাঁচ ভাগের ভালো করা। ❝এই চিন্তা ভাবনার পর আমি হিন্দু সংগঠন গুলির ওপর আকৃষ্ট হলাম। আর এর দ্বারাই মাতৃভূমির স্বতন্ত্রতা বজায় রাখা যাবে। ১৯৪৬ সালে জিহাদি মুসলমান দল কোলকাতা, নোয়াখালী, পাঞ্জাব সহ বিভিন্ন স্থানে হিন্দুদের ওপর কঠোর অত্যাচার চালায়। যার ফলে অনেক হিন্দু মারা যায়। বাংলার তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী সারাবর্দী নির্বচারে হিন্দু হত্যার স্লোগান দেয়। আর মুখে পৃথক রাষ্ট্রের দাবি। যখন গান্ধীজি সোরাবর্দী পার্থনা সভাতে শহিদ বলে সম্বোধন করেন তখন আমার ক্ষোভ আরও বেড়ে যায়।❞ দিল্লির ভন্ডি কলনির মন্দিরে পার্থনা সভায় জনতা ও পূজারীদের মধ্যে বিরোধ সৃষ্টি করার জন্য গান্ধীজি কোরানের বাণী পাঠ করেন কিন্তু ওনার কোনোদিন এই ক্ষমতা হয়নি যে মসজিদে গিয়ে উনি গীতাপাঠ করেন। তিনি এই কাজ ভুলেও কোনোদিন করবেন না কারণ গীতা পড়লে যে মুসলিমদের সাথে বিরোধ সৃষ্টি হবে। গান্ধীজি সর্বদা মর্যাদা সহনশীল হিন্দুদেরই নিজ কর্মের দ্বারা পীড়াদান করে থাকেন। পরের পর ব্যার্থ কর্মকাণ্ড, অনশনের নামে দুর্বল করে দেওয়া। ক্ষুদার্ত নেকড়ের ন্যায় মুসলিম দের হাতে নির্দোষ হিন্দুদের ছেড়ে দেওয়া এই সবের মাধ্যমে হিন্দুদের সহনশীলতা নষ্ট করার পক্রিয়া। আপ্তে এবং আমি ওখানে গান্ধী ও সোরাবর্দী বিরোধী স্লোগান দেওয়ার মনোস্থির করি। শেষমেষ গান্ধী ওই সভা ত্যাগ করতে বাধ্য হন। এই ঘটনা যখন সাভারকারের কর্নগোচর হয় তখন আমাদের কর্মকাণ্ডের বিষয়ে নানান উল্টোপাল্টা মন্তব্য করেন। ভারত বিভাজনের অন্তিম সিদ্ধান্তগ্রহনের কিছু আগেই সীমান্তবর্তি অঞ্চল গুলিতে আগ্রাসন দেখা যায়। বিহার, কোলকাতা, পাঞ্জাব প্রভৃতি সীমান্তবর্তী অঞ্চলগুলির হিন্দুদের দুর্দশার অন্ত থাকেনা। তবে কোনো উচ্চপদস্থ নেতা নেতৃদের এই ঘটনার সম্পর্কে কোনো মাথাবেথা ছিলো না। সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা শুরু হয়। বাধ পড়েনি মেয়েরাও। নারীদের উলঙ্গ করে পণ্যের ন্যায় বিক্রি করা হতে থাকে। চারিদিকে অরাজকতা। কংগ্রেস হেরে যায় মুসলিম লীগের তলোয়ারের কাছে। ১৫ই আগষ্ট কংগ্রেসের স্বাধীনতা প্রাপ্তির আনন্দ আর অপর দিকে পাঞ্জাবে হিন্দুদের ওপর মুসলিম দের অত্যাচার। হিন্দুরক্তে রাঙানো স্বাধীনতা প্রাপ্তির আনন্দ।❞ যখন গোডসে কে জানা হয় গান্ধীজির পার্থনা সভায় বিরোধের চিন্তা কী সাভারকারের নির্দেশনাতে। তিনি তা অস্বীকার করেন। তিনি বলেন যে একটা জীবন গঠিত হতে গেলে সব ধর্মের ওপর সমান ভক্তি শ্রদ্ধা রাখা প্রয়োজন। গান্ধীজি পার্থনা সভায় একসাথে গীতা, কোরান ও বাইবেল পাঠ করতেন। গোডসে তা সমর্থনও করতেন। কিন্তু গান্ধীজি সর্বদা মুসলিমদের হীতের উদ্দেশ্যে কাজ করতেন তা সর্বদা বিরোধের যোগ্য ছিল। ১৯২০ সালে লোকমাণ্য তিলকের পর গান্ধীজি কংগ্রেসের সর্বেসর্বা হয়ে ওঠেন। জনতার জাগরণ, সত্য ও অহিংসার বানী সাধারণ মানুষের কাছে স্বপ্নের মতো। দেশের শান্তি আনার জন্য হিংসার পথ ধরা অবসম্ভাবি। রাম যখন রাবণের সংহার করেছিলেন তখন কী উনি হিংসার পথ বেছে নেননি? মহাভারতের যুদ্ধেও অর্জুন কে তাঁর আপনজনদের বিরুদ্ধে অস্ত্র ধরতে হয়েছিলো, পিতামহ ভীষ্মকেও হত্যা করতে হয়েছিলো তাহলে কী অর্জুন অধর্মী? গান্ধীজি সর্বদা শীবাজি, প্রতাম ও গুরু গোবিন্দ সিং জীর নিন্দা করেছেন। ওনাদের মার্গ নাকি অধর্মের মার্গ। শীবাজি যদি আফসাল খান কে বাঘনখ দিয়ে হত্যা না করতো তাহলে শীবাজি কে মরতে হতো। শীবাজি মোঘল সাম্রাজ্যের আগ্রাসনের বিরুদ্ধে লড়াই করেছেন, উনি নাকি ভুল পথে চলেছেন! যারা গান্ধীজির নীতি মানতে অস্বীকার করতেন তারা নিজেরা বলপূর্বক দেশমাতৃকার শিখল খোলার প্রয়োত্ন করতেন। সশস্ত্র বিপ্লব গড়ে তুলতেন ইংরেজদের বিরুদ্ধে। কিন্তু গান্ধীজির ৩০ বছরের নৈতিক জীবনে বহু মন্দির অপবিত্র হয়েছে। ধধর্মান্তরিত করা হয়েছে বহু মানুষকে, নারী জাতির মর্যাদা নষ্ট করা হয়। ১৯১৪ সালে গান্ধী বিদেশ থেকে দেশে ফেরত এসে রাজনৈতিক জীবনে অংশ নেয়। তাঁর আমলেই গোলটেবিল বৈঠকে বোম্বাই থেকে সিন্ধপ্রদেশ কে বিচ্ছিন্ন করা হয়। কিন্তু সেখানে বসবাস কারী হিন্দুদের কথা চিন্তাভাবনা করা হয়নি। তাদের পরিণতি নিয়েও কারোর দায় নেই। জিন্নাহ ততোদিন পর্যন্ত ফেডারেশন থেকে সরে থাকে যতদিন না গান্ধীজি স্বয়ং ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী র্যামসে ম্যকডোলান্ড এর কাছে পৃথক নির্বাচনের দাবি না রাখে। ১৯৩৫ সালের শাসন আইনে এই ভেদ আরও দৃঢ় হয়। কংগ্রেস ইংরেজ সরকার এর কাছে সত্বা লাভ করে এবং মুসলিমলীগ কে আসস্ত্ব করে যে কংগ্রেস তাদের বিরোধ করবেনা। নির্বাচনের ক্ষেত্রে দুর্মুখোতার প্রকাশ পায় । ২য় বিশ্বযুদ্ধের সময় জিন্নাহ ইংরেজ সরকার কে বলে যে যতোদিন না তারা পৃথক মুসলিম রাষ্ট্র পাচ্ছে ততোদিন কোনো মুসলিম তাদের সহায়তা করবেনা। এই প্রস্তাবে ইংরেজ সরকার রাজি হয়। কারণ ইংরেজ সরকারও তাই চাইছিলো। ১৯৪০ সালে পৃথক পাকিস্তানের দাবি রাখে আর যুদ্ধের ৬ মাসের মধ্যে মুসলমানদের সুরক্ষার জন্য পৃথক রাষ্টের দাবি শুনে ইংরেজ আনন্দিত। ১৯৪২ সালে গান্ধীজির নেতৃত্বে ভারত ছাড়ো আন্দোলনে হারের পর কংগ্রেস সমঝোতা করতে উদ্যত হয় যে ক্ষমতা ও সুরক্ষা কংগ্রেসের হাতে থাক। নেহরু তখনও চিন্তা করতেন যে ভারতে আবার হিন্দু মুসলিম একতা দেখা যাবে। আর যারা এই জিহাদিদের বিরোধ করতো তাদের সাম্প্রদায়িক জঙ্গির আখ্যা দেওয়া হতো। তখন নেহেরু কে স্মরণ করানোর প্রয়োজন ছিলো যে উনি সম্প্রদায়ের ভিত্তিতে ভারতের বিভাজন করেছেন। বিভাজনের ফলে প্রায় ১৫কোটি ২০ লক্ষ লোক বেঘর হয়। যার মধ্যে ৪০লক্ষ মুসলিম। পাকিস্তানের হিন্দুদের ওপর নির্জাতন শুরু হয়, করাচি, সাক্ষার, শিখরপুর ও সিন্ধের অন্যান্য প্রান্তে এই দাঙ্গার প্রসার দেখা যায়। বহু হিন্দু মারা যায়। গান্ধীজি কাশ্মিরের রাজা হরি সিং কে ভুল পথে চালিত করার প্রচেষ্টা করেন। গান্ধীজি হরি সিং কে পরামর্শ দেন যে তিনি যেমন সন্যাস গ্রহণ করে কাশি রওনা হয়ে যান এবং কাশ্মীরের রাজভারের সত্বা মুসলিম নেতা শেখ আব্দুল্লা কে অর্পন করেন। কাশ্মিরের রাজা হিন্দু আর অধিকাংশ জনতা মুসলিম। কিন্তু হায়দ্রাবাদের নিজাম কে এই রূপ কোনো পরামর্শ দেননি। তিনি নিজাম কে একবারও বলার সাহস হয়নি যে তিনি যেন ফকিরি নিয়ে মক্কায় চলে যায়। হায়দ্রাবাদে হিন্দুদের সংখ্যা নেহাতই কম ছিলো না। মাউন্টব্যাটেন ছিলেন দক্ষিনপূর্ব সেনার জেনারেল। উনি এক মহৎ উদ্দেশ্য নিয়ে ভারতে আসেন সেটা হলো ভারতের বিভাজন, তিনি সেই কার্যে সফল হয়েছিলেন। গান্ধীজি ছিলেন হিংসক শান্তি মুর্তি। গান্ধীজি ওনার লেখাতে বলেন-❝ মুসলিমরা যদি তাদের পৃথক রাষ্ট্রের দাবি রাখে তাহলে তাতে বাধা দান করার সাধ্য কারোর নেই ❞। এই কথার মাধ্যমেই কী উনি পাকিস্তানের দাবি সমর্থন করেছিলেন। এর প্রকৃত ব্যাখ্যা একমাত্র গান্ধীই জানতেন। গান্ধী জিন্নাহ কে সর্বদা ভাই বা কায়েদ এ আজম বলে সম্বোধন করতেন। যদি কংগ্রেস পাকিস্তানি হিন্দুদের সুরক্ষার দায়িত্ব নিতেন তাহলেও আমার ক্রোধ প্রশমিত হতো। কিন্তু কংগ্ররস তা করেনি। যদি পাকিস্তানি দের হুমকি দিয়ে বলতো যে যদি তারা পাকিস্তানি হিন্দুরের ওপর নির্জাতন করা বন্ধ না করবে তাহলে ভারতে থাকা মুসলমান দেরও একই পরিণতি করা হবে। কিন্তু তা হয় নি। দলে দলে শরনার্থী ভারতে আসতে থাকে। শরনার্থীরা দিল্লির মসজিদ গুলিতে আশ্রয় নিয়েছিলো। গান্ধীজি তাদের উদ্দেশ্যে বলতে থাকে তারা যেমন সেই স্থান ত্যাগ করে রাস্তায় বেরিয়া আসে আর মসজিদ মুসলিম দের ফিরিয়ে দেয়। গান্ধীজি তার দাবি পূর্ণ করার জন্য অনশনে বসার হুমকি দেয় এবং তার জেদে সফল হয়। যেদিন গান্ধীজ অনশন রদ করেন সেদিন আমি দিল্লিতেই ছিলাম। শীতের দিন তার ওপর প্রবল বৃষ্টিতে ঘরের বাইরে বেরোনো যাচ্ছেনা আর শরনার্থীরা অসহায় অবস্থায় কুটুম্ব পরিবারকে সঙ্গে নিয়ে বিড়লা হাউসের দিকে অগ্রসর হয়। তারা চিৎকার করতে থাকে গান্ধীজি আমাদের থাকবার যায়গা দিন। এই ঘটনার পরই আমি সিদ্ধান্ত নিই যে গান্ধীজি কে স্বাভাবিক মৃত্যু পর্যন্ত জীবিত রাখা যাবে না। যদি ততোদিন পর্যন্ত গান্ধীজি জীবিত থাকেন তাহলে হিন্দুদের ওপর থেকে গান্ধীজির কালোছায়া কোনোদিনই সরবেনা। এর পরই ৩০ জানুয়ারির পার্থনা সভাতে ঢুকে গান্ধীজিকে শ্রদ্ধা দেখিয়ে গান্ধীকে হত্যা করি। ❞ — নাথুরাম বিনায়ক গোডসে ৮নভেম্বর ১৯৪৮ বয়ান দেন। উনি চেয়েছিলেন ভারতবাসী গান্ধীজির আসল স্বরূপ জানুক, আর পপরবর্তী কালের ইতিহাসবিদ গণ সঠিক ইতিহাস রচনা করুক। আমদের ছোট থেকেই গান্ধীজিকে মহাত্মা হিসেবে দেখানো হয়েছে। দেখানো হয়েছে উনি দেশের জন্য কী না করেছেন। অনশন করে দেশের সুবিধার জন্য অনেক কিছু করেছেন। গান্ধীজি হলেন জাতির জনক। আর একমাত্র নেতা। না উনি একমাত্র নেতা মোটেইনা। উনি অহিংসার মুখোশের আড়ালে নিজের কার্যসিদ্ধি করেছেন। উনি শুধু চেয়েছেন সবাই ওনাকে মান্যতা দিক শ্রদ্ধা করুক, এটাকি প্রকৃত নেতার উক্তি। যেই নেতা পকৃত দেশ সেবা করবেন দেশের শান্তির জন্য কাজ করবেন দেশের প্রত্যেকটি প্রাণীর সুরক্ষার দায়িত্ব নেবেন সেই নেতাকেই জনসাধারণ প্রকৃত নেতা হিসেবে মানবে। হয়তো গোডসের কথা সত্যি গান্ধীর মৃত্যু না ঘটলে আমাদের দেশ কোনো দিনই শক্তিশালী হতোনা আর অন্যায়ের বিরুদ্ধে ন্যায় স্থাপন করার জন্য অনশন না শস্ত্র দিয়ে যোগ্য জবাব দিয়ে। আজ দেশ বিশ্বের শক্তিশালী দেশগুলির তালিকাতে ৪থ স্থানে রয়েছে। আজ ভারতের সেনা মজবুত দৃঢ় সুরক্ষা ব্যাবস্থা কে ভেঙে কারোর সাধ্য নেই ভারতে প্রবেশ করে উপনিবেশ তো দূরঅস্ত।