• Facebook
  • Instagram
  • Twitter
Friday, December 30, 2022
  • Login
  • Home
  • Archives
    • Archives
    • The Indian Rover ( Issue: December, 2022)
    • The Indian Rover (Issue: October, 2022)
    • The Indian Rover (Issue: June, 2022)
    • The Indian Rover (Issue: March, 2022)
    • The Indian Rover (Issue: December, 2021)
    • The Indian Rover (Issue: November, 2021)
    • The Indian Rover (Issue: October, 2021)
    • The Indian Rover (Issue: September, 2021)
    • The Indian Rover (Issue: August, 2021)
    • The Indian Rover (Issue: July, 2021)
    • The Indian Rover (Issue: June, 2021)​
    • The Indian Rover (Issue: May, 2021)
    • The Indian Rover (Issue: April, 2021)
    • The Indian Rover (Issue: March, 2021)
    • The Indian Rover (Issue: Feb, 2021)
    • The Indian Rover (Issue: Jan, 2021)
  • Categories
    • Finance
    • Science
    • Sports
    • Non Fiction
  • About
  • Contact Us
  • Submit Guest Post
    • Login
    • Account
    • Dashboard
  • Announcement
No Result
View All Result
The Indian Rover
Advertisement
  • Home
  • Archives
    • Archives
    • The Indian Rover ( Issue: December, 2022)
    • The Indian Rover (Issue: October, 2022)
    • The Indian Rover (Issue: June, 2022)
    • The Indian Rover (Issue: March, 2022)
    • The Indian Rover (Issue: December, 2021)
    • The Indian Rover (Issue: November, 2021)
    • The Indian Rover (Issue: October, 2021)
    • The Indian Rover (Issue: September, 2021)
    • The Indian Rover (Issue: August, 2021)
    • The Indian Rover (Issue: July, 2021)
    • The Indian Rover (Issue: June, 2021)​
    • The Indian Rover (Issue: May, 2021)
    • The Indian Rover (Issue: April, 2021)
    • The Indian Rover (Issue: March, 2021)
    • The Indian Rover (Issue: Feb, 2021)
    • The Indian Rover (Issue: Jan, 2021)
  • Categories
    • Finance
    • Science
    • Sports
    • Non Fiction
  • About
  • Contact Us
  • Submit Guest Post
    • Login
    • Account
    • Dashboard
  • Announcement
No Result
View All Result
The Indian Rover
No Result
View All Result
Home Magazine

আধুনিকতার সাথে প্রাচীনত্বের সহাবস্থান

Tirtha by Tirtha
September 16, 2021
in Magazine, Non Fiction
0
0
SHARES
29
VIEWS
Share on FacebookShare on Twitter

The Indian Rover (Issue: September, 2021)

আধুনিকতার সাথে প্রাচীনত্বের সহাবস্থান - জয়দীপ গোস্বামী

সময়  যখন বহমান আর জীবনের এই গতিতে সময় তারা পাতায় অনেক কথা লিপিবদ্ধ করে রেখেছে আর সেই লেখা গুলোর ওপর ভর করেই আমাদের আগামী দিনের সময় অতিবাহিত হয়। আর সেই স্মৃতিগুলোও কালের মহিমাতে অনেকই তাদের অস্তিত্বকে টিকিয়ে রাখার সংগ্রামে লিপ্ত হয়েছে। আর এই অবক্ষয়ের আরও একটা প্রধান কারণ হলো নব প্রজন্মের আধুনিকতার কাছে এই সব প্রাচীনতার গুরুত্ব অনেক কমে গেছে। আধুনকিতা সাথে স্বমহিমায় এঁটে ওঠার ক্ষমতা হারায়নি আধুনিক মনষ্ক মানুষের মনুষত্বের কারণে অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখতে অক্ষম হয়ে পড়ছে। ওই সব পুরোনো স্থাপত্য, শিল্প, কলা, প্রাচীন চিত্রকলা নিয়ে সংক্ষিপ্তাকারে আলোচনা করি। আমাদের এই সভ্যতা অতিপ্রাচীন সভ্যতা তা নিয়ে কোনো দ্বিমত নেই। তাই প্রাচীন ভারতীয় এইসব কলাকার দের নির্মিত কলাকৌশল  আজও আমাদের মুগ্ধ করে। আমরা প্রাচীন ভারতীয় সভ্যতার বিবরণ হিসেবে যেই গুলোর ওপর নির্ভর করি তাদের মধ্যে অন্যতম নির্দশন হলো মন্দির, রাজবাড়ী, দূর্গ, নাটমন্দির, মূল মন্দির প্রভৃতি। আবার এই সব মন্দির গুলোর গঠন প্রনালীর-ও নানা প্রভেদ লক্ষ্য করা যায়। যদি আমরা যদি মন্দির গুলির গঠন প্রনালী নিয়ে পর্যালোচনা করি তাহলে দেখতে পাবো যে আমাদের এই উপমহাদেশের মন্দিরগুলির কোনোটির গঠন রথের মতো আবার কোনোটি ঘরের মতো আবার কোনোটি একচালা, দুচালা বিশিষ্ট আবার কোনোটি আটচালা বিশিষ্ট, কোনো মন্দিরের চুড়া একটি আবার কোনো মন্দিরের চুড়া অনেক। এই সব গঠন আর বৈচিত্র ভারতকে আরও সাজিয়ে তুলেছে। প্রাচীন কালের ওই সব মন্দির গুলির নির্মান পদ্ধতি নিয়েও অনেক মতপার্থক্য লক্ষ্য করা যায়। অনেক স্থপতির মতে আগেকার দিনে মন্দির গুলো নির্মানের জন্য প্রধান গুরুত্ব দেওয়া হতো বাস্তু, জ্যোতির্বিজ্ঞান, জ্যোতিষশাস্ত্র, রাজারাজড়া বংশতালিকা প্রভৃতির ওপর নির্ভর করে নির্মিত হতো। আমাদের শুধু না যেই দেশে সনাতন ধর্ম বা বহূইশ্বরিকতত্বের প্রচলন আছে সেই সব দেশেই এই মন্দির গুলি দেখা যায়। মন্দির গুলি বিভিন্ন দেবদেবীর হতে পারে। মন্দিরের আকার আকৃতি গঠন নিয়েও অনেক প্রভেব লক্ষ্য করা যায়। যেমন, কোনো কোনো মন্দিরের আকার বড়ো আবার কোনো মন্দিরের গড়ন ছোট। আমাদের এই প্রাচীন ভারতীয় সভ্যতায় বেশিরভাগ মন্দির কোনোনা কোনো রাজার পৃষ্ঠপোষকতায় গঠিত হয়েছে। এবং সময়ের সাথে রাজার রাজত্ব আর রাজত্বের পরিবর্তনের সাথে সাথে মন্দির নির্মানকৌশল আর মুর্তি নির্মান প্রনালীর পরিবর্তন হয়েছে। যদি এই ধারণা মিথ্যে হতো তাহলে সব মন্দিরের ধরণ একইরকম হতো তা তো হয়নি। এছাড়া প্রাচীন কালে তো আর সময় নির্ধারণ করার জন্য আধুনিক ক্যালেন্ডার  ছিল না তাই তখনকার স্থপতি রা সময় নির্ধারণ করার জন্য গ্রহ নক্ষত্রের অবস্থান এর ওপর ভিত্তি করে মন্দির শুরুর আর শেষ এর দিনসংখ্যার নির্ধারণ করতো, সময় নির্ধারণ করার জন্য সূর্যদয় থেকে সূর্যাস্তের সময়কে নির্ধারণ করতো। আর সঠিক স্থান মন্দিরের গঠন আকার আকৃতি নির্ধারণ করার জন্যেও গ্রহনক্ষত্রের অবস্থান নির্নয় করে করতো। মন্দির নির্মানের ক্ষেত্রে আরেকটা গুরুত্বপূর্ণ জিনিস হলো বাস্তু শাস্ত্র। কারণ মন্দিরটি কোথায় নির্মান করা হবে তা বাস্তুশাস্ত্র-র মাধ্যমে নির্ধারণ করা হতো। কারণ বাস্তুর ওপর নির্ভর করত মন্দিরের গঠন কেমন হবে, সূর্যের চলাচল কেমন থাকবে, মাটির উপাদান গুলির পরিমাণ, মাটির গঠন প্রনালী, কোনমাটিতে নির্মান কার্য ভালো হবে, ওই বাস্তুতে চাষাবাদ করা হতো কিনা, মাটির উর্বরতা নির্ধারণ করা হতো। আর তখনকার দিনের রাজারা নিজের আত্মকির্তী সময়ের পাতায় লিখে রাখার জন্য অনেক মন্দির নির্মান করতেন, আর ওই মন্দির গুলিকে কেন্দ্র করে নানা জনবসতি, বাজার, লোকালয় গঠিত হতো। রাজারা বা নির্মাতারা মন্দিরকে কেন্দ্র করে নানা রাস্তার নির্মান করতেন যাতে দর্শনার্থীদের মন্দিরে আসতে অসুবিধা না হয়।

আমাদের ভারতে মূলত ২প্রকারের মন্দির নির্মান পদ্ধতির প্রচলন রয়েছে, উত্তর ভারতীয় আর দক্ষিণ ভারতীয় পদ্ধতিতে। মন্দির গুলির সাধারণতঃ যে ধরণের নির্মান করা হয় তাতে মূলত একটা গর্ভগৃহ থাকে, যেখানে ভগবান অধিষ্ঠিত হন। যেখানে ঘড়ির ঘুর্ণনের দিকে ঘুরে ঘুরে প্রদক্ষিন করার প্রথা হয়ে আসছে। গর্ভগৃহের উপর শিখর আর শিখরে কলস। শিখরকে দক্ষিন ভারতে ভিমানা নামে পরিচিত। এই শিখরের গায়ে নানা পাথরের কারুকার্য করা হতো। মন্দিরের ভেতরে উত্তরণ নির্মান করা হতো। কোথাও মহাভারত রামায়ণের যুদ্ধের বর্ণনা, সমুদ্র মন্থনের ঘটনা, এছাড়াও যেই রাজা মন্দির নির্মান করছে সেই রাজার যুদ্ধের ছবি এখানে ব্যাবহৃত হতো। আবার চৈতন্য পরবর্তী তথা বিষ্ণু শিব কৃষ্ণ মন্দির গুলিতে চৈতন্যদেবের নাম সংকীর্তন প্রচারের চিত্র অঙ্কিত হয়েছে। ওখানে দেখা যায় নিমাই পণ্ডিত তাঁর পারিষদ সঙ্গ নিয়ে হরিনাম বিলি করছেন। তার থেকে আমরা তখনকার সময় সম্পর্কে জানতে পারি। এবার আসা যাক iconography বা মুর্তি নির্মান পদ্ধতির ব্যাপারে। প্রাচীন দেবদেবীর মুর্তি আরও খোলসা করে বলতে হলে বলতে হয় পাথরের বিগ্রহ গুলির নির্মানপ্রনালীর মধ্যেও অনেক রহস্য আছে। অনুমান করা যায় যে, এই সব মুর্তি গুলোর নির্মান প্রনালীও সময় রাজা অঞ্চলভেদে পরিবর্তন হয়ে থাকে। উধারণ স্বরূপ বলা যায় যে প্রাচীন কালে যেই সব কালী মন্দির নির্মিত হয়েছে তাদের প্রত্যেকের গঠন প্রনালী আলাদা। আবার প্রচলিত ধারা সাবেকি পূজো গুলিরও যে মুর্তি প্রস্তুত করা হয় সেই গুলির মধ্যেও বিচিত্রতা পরিলক্ষিত হয়। আবার অনেক বংশের বংশ পরম্পরায় একই ধারায় মুর্তি নির্মান করার ধারা প্রচলিত রয়েছে। উদাহরণ হিসেবে বলা যায় যে সাবর্ণ রায় চৌধুরি বাড়ির কালী পুজোতে যবে থেকে পুজোর প্রচলন শুরু হয়েছে তবে থেকে একই ধরণের ধারা অব্যাহত রাখা হয়েছে। আবার আসা যাক মন্দির গুলির গঠন প্রনালী নিয়ে। এই সব স্থাপত্য মূলত Synthesis of arts, মানুষের ধার্মিক দিক, হিন্দু ধর্মে প্রভাব। আমাদের দেহ যেমন পঞ্চভূত দ্বারা নির্মির হয়েছে তেমনই মন্দির গুলিও এই পঞ্চভূত দ্বারা নির্মিত হয়েছে তেমনই মন্দির গুলিও ওই পঞ্চভূতের প্রতীক। বার প্রচলিত যে মন্দির গুলিতে অর্থ কাম দূরিভুত হয় আর মোক্ষপ্রাপ্ত ঘটে। প্রাচীন কালে এই স্থাপত্য নির্মান কেন্দ্রিক অনেক গ্রন্থ রচিত হতো সেই গুলি শিল্প শাস্ত্র নামে পরিচিত। হিন্দু সংস্কৃতি তে  শিল্পিদের উৎসাহিত করা হতো মন্দির নির্মান আর নিত্যনতুন কারুকাজ নির্মান করার জন্য, কিন্তু অনেক ক্ষেত্রেই এই তথ্য বিকৃত হয়েছে। কারণ যে যে শিল্পি এই মন্দির স্থাপত্য, ভাস্কর্য নির্মান করতো কর্তৃপক্ষ তাদেরওপর নানা জুলুম চালাতো পারিশ্রমিক দিতোনা। 

ভারতীয় এই স্থাপত্য এর ইতিহাস সময়ের অতি গভীরে প্রথিত রয়েছে। আমার যেই সব স্থাপত্য এর নিদর্শন লক্ষ্য করি তার বেশিরভাগই গুপ্তযুগের। তার থেকেও অনেক পুরোনো নিদর্শন রয়েছে যেমন উদয়গিরি এবং খণ্ডগিরির গুহা, মহাবলীপুরম, সাঁচিস্তুপ, অশোকের শিলালেখ, নালন্দা বিশ্ববিদ্যালয়ের ধ্বংসস্তুপ, বিভিন্ন বৌদ্ধ গুম্ফা প্রভৃতি। সবার থেকে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো আমরা সবাই জানি ১২০০ খ্রীস্টাব্দে মুশলিমদের ভারতে আগমন আর ১২০৬ সালে দাস বংশের প্রতিষ্ঠা। এবং ১৫২৬ এ সুলতানি সাম্রাজ্যের শেষ রাজা ইব্রাহিম লোদিকে পরাজিত করে বাবর মোঘল সাম্রাজ্যের পত্তন করেন। এই সব বাদ দিলে সেই সময় কিন্তু ভারতীয় স্থাপত্যেও এর ছাপ পড়ে। Indian Architecture এর সাথে Turkish Architecture এর collaboration ঘটে এবং এক মিশ্র সংস্কৃতি গড়ে ওঠে এবং এক নতুন ধারার জন্ম হয়। মন্দির নির্মান পদ্ধতি মূলত প্রজন্মভিত্তিক ভাবে চালিত হতো। মন্দির গুলি নির্মান করা হতো কোনো এক architect এর তত্বাবধানে, মুর্তিকার, চিত্রকর, শ্রমিক প্রভৃতি বিভাগ থাকতো যে যার নির্দিষ্ট কাজ করতেন, পুরো আধুনিক সভ্যতার মতো। প্রাচীন স্থাপত্য কলার অনেক গুলি ধারা প্রচলিত ছিল। ব্রহ্মসংহিতা অনুসারে মন্দির গুলিকে পাঁচটি শ্রেণিতে ভাগ করা যায় তাদের গঠন প্রনালী কে কেন্দ্র করে, যথা- নাগাড়া, দ্রাবিড়, ভেসর, উপবৃত্তাকার এবং আয়তাকার। মন্দিরের খসড়া বা কাঠামো মূলত চৌকো, আটকৌণিক বা অপ্সিডাল আকারের হয়। দক্ষিন ভারতে মূলত দ্রাবিড় বা নাগাড় গোষ্ঠীর মন্দির বেশি দেখা যায়। বর্ষাঞ্চল, ভেজা এলাকাতে মূলত এই প্রকার মন্দির দেখা যায়। আর নাগাড়া মন্দির শৈলী বংলাতে দেখতে পাওয়া যায়। মধ্যভারতীয় মন্দির গুলির গঠন রথের মতো। আবার কোথাও মন্দির ঘরের মতো, আবার কোথাও খিলান বা গম্বুজের মতো। মন্দির গুলি বিশেষ কয়েকটি বিভাগ দ্বারা নির্মিত। মন্দিরের এই গঠন গুলি প্রাচীন শাস্ত্রে নির্দিষ্ট নামের উল্লেখ আছে। অধিষ্ঠান, মন্দিরের পিলার গুলো দাঁড়িয়ে থাকে ,  পঞ্চদশ মানসরা, কামিকাগামা ৩৫, সুপ্রভবদেগামা ৩১ এর উল্লেখ আছে। মন্দিরের সাথে প্রকৃতির সহাবস্থান সেই প্রাচীন কাল থেকে সেটা আগেই আলোচিত হয়েছে। মন্দিরের সাথে প্রকৃতির এক বিচিত্র উদাহরণ আমলকি ফলের সাদৃশ্য লক্ষ্য করা যায়। মন্দিরের শিখরের আকৃতি আমলকি ফলের সাথে সাদৃশ্য রেখে নির্মিত হতো, তাই মন্দিরের এই ভাগকে অমালক বলা হয়। মন্দিরের অন্তরলা হলো মন্দিরের সেই ফাঁপা অংশ যেখানে সব ভক্তরা সমাবেশ করে। মন্দিরে অর্ধমন্ডপ নামে একটা হল নির্মান করা হতো যা মন্দিরের রিসেপশন ও বলা চলে। মন্দিরে সমাবেশ হলও নির্মান করা হতো যেখানে দর্শনার্থীদের সমাবেশ হতো, যা শিল্পশাস্ত্রে আয়তন নামে পরিচিত। এই আয়তন গুলিতে নানা জ্ঞান ও ধর্মের সমাবেশ হতো, গুরু শিষ্যকে শিক্ষাদান করতেন। মন্দিরে আরও একটি অংশ হলো গন, গন হলো মন্দিরের নির্মিত এমন এক মুর্তি যার গঠন বামন আকৃতির, মাথা বড়ো আর বাকি দেহ ছোট। আরেকটি অংশ এবং প্রধান অংশ গর্ভগৃহ। এই গর্ভগৃহেই দেবতা অধীষ্ঠান করেন। একে কেন্দ্র করে পরিক্রমা করা হয়, এই গর্ভগৃহের মধ্যে সর্বদা শান্তি বিরাজ করে মনে অন্য কোনো চিন্তা ভাবনা কাজ করেনা। একটা প্রচলিত ধারণা পূরী মন্দিরকে কেন্দ্র করে প্রচলিত আছে- পূরীর মন্দিরে ভগবানের দর্শন পাওয়ার আগে চারটে চরণ অতিক্রম করতে হয়। মন্দিরে প্রবেশ করা মাত্র অর্থ্যাৎ প্রথম চরণে কাম দূরিভুত হয়, ২য় চরণে ক্রোধের করালগ্রাস থেকে মানব মন মুক্তি পায়, তৃতীয় চরণে লোভ দূরীভূত হয় আর অন্তিম চরণে মোক্ষ্য প্রাপ্তি ঘটে। এবার আসা যাক গর্ভগৃহের নামের পশ্চাতে কারণ হিসেবে, কোনো জীব যখন তার মাতৃগর্ভে থাকে তখন কোনো মহাজাগতিক পার্থীব জাগতীক কোনো কিছুই স্পর্শ করতে পারেনা এবং সন্তান নিরাপদে থাকে। সেই সূত্রেই গর্ভগৃহ নাম করা হয়েছে। মন্দিরের খিলানের নকশা গুলির মধ্যে ঘোড়ার নালের ন্যায় আকৃতি বিশিষ্ট পাথরের দ্বারা নির্মিত একপ্রকার মুর্তি বা ভাস্কর্য যার দ্বারা মন্দিরের জানালা, স্পিয়ার এবং পিলার গুলি সজ্জিত হতো। গোপূরম হলো মন্দিরের প্রবেশের একটি রাস্তা যেটি মন্দিরের দুটি ভীতকে যুক্ত করেছে। এই গোপূরম এর আকৃতি দক্ষিন ভারতীয় মন্দির গুলিতে অনেক বড়ো বড়ো হয়ে থাকে। গোপূরম শব্দটি ভারতীয় মঠমন্দির গুলির সাথে জড়িত এবং গোপূরম শব্দটি সংস্কৃত শব্দ গোমতীপুর থেকে এসেছে। মন্দিরের হার নামে একটি অংশ নির্মান করা হয়। যা মেয়েদের গলার হারের সমানুপাতিক। ৬ঠ শতাব্দীতে পাথরের দ্বারা ছিদ্র যুক্ত একপ্রকার জানালা নির্মান করা হতো যা আধুনিক কালের লোহার গ্রিলের মতো, একে জালা বলা হতো। জাগতি হলো মন্দিরের উত্থিত পৃষ্ঠ বা টেরেস যার ওপর সমগ্র মন্দির দাঁড়িয়ে থাকে। জাগতিকে কেন্দ্র করে প্রদক্ষিণ করা হয়। কলশ হলো মন্দিরের অতি পবিত্র একটি অংশ। প্রাচীন কালে এই কলশ মূলত সোনা বা রূপো দ্বারা নির্মান করা হতো আর হিন্দু মন্দিরের একটা বৈশিষ্ট্য। তাজমহলের ওপরে এমনই একটা কলশ লক্ষ্য করা যায়। মন্দিরে একটি জলাশয় নির্মান করা হতো, দেবপূজার যাবতীয় জল ওইখান থেকে সংগ্রহ করা হতো। দৈবকাজে ব্যাবহার করা হতো বলে এই কুন্ডকে পবিত্র শুদ্ধ বলে মনে করা হতো। একনও মন্দির গুলির নিজস্ব কুন্ড আছে। আমাদের এই প্রকৃতিতে কতোইনা প্রানী আছে যাদেরকে হয়তো আমরা এখনও চিনিনা, কতো প্রানী বিলুপ্ত হয়ে গেছে আবার কেও টিকে আছে। এমনই এক পৌরাণিক প্রানী হলো মকর যার গড়ন কুমির আর মাছের মিশ্রণে গঠিত আর মুখে হাতির ন্যায় শূড়। এই প্রাণীকে অনেক পবিত্র মনে করা হয়, মকর হলো দেবী গঙ্গার বাহন তাই মন্দিরগাত্রে অনেক মকরের অবয়ব নির্মান করা হতো। মন্ডপ হিন্দু মন্দির গুলিতে দেখা যায়। মন্দিরের মন্ডপ মুক্ত বা বদ্ধ দুই হয়ে থাকে, যা মন্দিরের গঠনের ওপর ভিত্তি করে গড়ে ওঠে। মন্ডপ হলো মন্দিরের দরজাথেকে মূল দেব বিগ্রহের সামনে পর্যন্ত ফাঁকা অংশ। বড়ো মন্দিরের মন্ডপের আয়তন বড়ো হয়। মন্দিরের আরেকটা অংশ হলো প্রাকার। মন্দির চত্বর কে প্রাকার বলা হয়। যেখানে মূলত পার্থনা গৃহ নির্মান করা হতো। ভারতীয় স্থাপত্যরীতিতে রথ হলো অতি গুরুত্বপূর্ণ এক বিষয়। মন্দির নির্মান করার সময় মন্দিরের যে নকশা তৈরি করা হতো ওই নকশাতে এই রথের বর্নণা লক্ষ্য করা যায়। মন্দিরের রথ হলো মন্দিরের বিভাগ। এই রথ তিন প্রকার হয় ত্রিরথ, পঞ্চরথ আর সপ্তরথ। ত্রিরথে মন্দিরের যেই দিক থেকেই ধাপ বা বিভাগ সংখ্যা গণনা করা যাক না কেনো এক্ষেত্রে ৩টি ধাপ লক্ষ্য করা যায়। আর পঞ্চরথে পাঁচটা আর সপ্তরথে সাতটা। বাংলাতে যেই সমস্ত প্রাচীন মন্দির দেখা যায় তার মধ্যে পঞ্চরথ বেশি দেখা যায়। আর এই রথের ওপরেই মন্দিরের শিখর অবস্থান করতো। কোনারকের সূর্য্য মন্দিরে এই রথের ধারণাটি ভালো ভাবে পরিলক্ষিত হয়। মন্দিরের আরও একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ হলো স্তম্ভ। মন্দিরের নির্মান করার সময় শান্তির প্রতীক হিসেবে স্তম্ভ নির্মান করা হতো, এই স্তম্ভ গুলো মন্দিরের মাহাত্ম আরও অনেক বাড়িয়ে দিয়েছিল। এমন কয়েকটি উল্লেখযোগ্য স্তম্ভ হলো অরুন স্তম্ভ, গোড়ুঢ় স্তম্ভ। মন্দির চত্বরের সবথেকে বড়ো ফটককে তোরণ বলা হতো। মন্দিরের গঠন প্রনালী বর্ণনা করার পর এবার মন্দির তৈরির পক্রিয়া সম্পর্কে আলোচনা করা যাক। এই মন্দির নির্মান নিয়েও অনেক মত সামনে এসেছে। মতপার্থক্য অস্বাভাবিক নয় কারণ তখনতো আর আধুনিক সময়ের মতো উন্নত যন্ত্রপাতি ছিলো না, না ছিলো ভারী জীনিস তোলার জন্য ক্রেন, আর নির্মান শিল্পে ব্যাবহৃত অত্যাধুনিক যন্ত্রপাতি। প্রচলিত ধারণা অনুসারে মন্দির গুলি নির্মান হতো ছেনি হাতুড়ি দিয়ে। আর হ্যাঁ প্রায় সব মন্দিরই নির্মান করা হতো পাথর দিয়ে। কোথাও আস্ত পাহাড় কেটে, আবার কোথাও পাথরের চাঁইকে একটার ওপর আরেকটা চাপিয়ে গুড়, বালি আর চুনাপাথরের মিশর্ন অর্থ্যাৎ আঁঠা জাতীয় কোনো জিনিস দিয়ে জোড়া হতো, তখনতো আর সিমেন্টের আবিষ্কার হয়নি। পাহড় কেটে যে সমস্ত মন্দির নির্মান করা হয়েছে সেই নির্মান শিল্পেরও অনেক পার্থক্য লক্ষ্য করা যায়। কোথাও Monolithic structure আবার কোথাও  অনেক গুলো পাথরকে কেটে নির্মান করা হতো। Monolithic structure এ একটি মাত্র পাথরকে কেটে মন্দির নির্মান করা হতো। যেমন রাষ্ট্রকূট রাজা প্রথম কৃষ্ণের সময় নির্মিত একটি মাত্র পাথর দ্বারা নির্মিত কৈশাল মন্দির। মাত্র ২০ বছর সময়ের মধ্যে নির্মান করা হয়েছিল। কিন্তু কেবলমাত্র ছেনি হাতুড়ি দিয়ে এতো বিশাল বিশাল মন্দির আর মন্দিরে কারুকার্য নির্মান করা হতো। পাথর তোলার জন্য কাঠের চাকা দেওয়া গাড়ি আর গাড়ি টানার জন্য হাতি ব্যাবহার করা হতো। আবার অনেক স্থপতির মতে মন্দির নির্মান করার সময় বালির ব্যাবহার করা হতো অর্থাৎ মন্দির ধাপে ধাপে নির্মান করা হতো। প্রথম ধাপে নির্মান কার্য সম্পন্ন হওয়ার পর বালি দিয়ে ওই অংশটাতে বালি ভরাট করা হয়। বালি ভরাট করার ফলে মন্দির নির্মান কাজ অনেক সহজ হতো। আবার নতুন করে নির্মান কাজ শেষ হলো আবার বালি ফেলা হতো। আর শিখর বা চূড়া আগে নির্মান করা হতো পরে তা ওপরে তোলা হতো। আবার অনেকের মতে বড়ো বড়ো পাথর তোলার জন্য জলের ব্যাবহার করা হতো। আর্কিমিডিসের সূত্রানুসারে জলে নিমজ্জিত কোন ভারী বস্তু তার ওজনের সমান জল অপসারণ করে। এক্ষেত্রেও একই  তত্ত্ব কাজ করে। তাই পাথর গুলো ওপরে তোলার জন্য জল ব্যাবহার করা হতো।  কিন্তু শুধু মাত্র এই পন্থা অবলম্বন করেই এতো সুন্দর সুন্দর মন্দির নির্মান করা হতো নাকি তখনও বিশেষ কোনো প্রযুক্তির প্রয়োগ করা হতো। এই সম্পর্কে জানার কোনো অবকাশ নেই সবই গবেষণা সাপেক্ষ। অনেক মন্দিরেরই কালের মহিমায় ধ্বংস ঘটেছে। আবার ভারতে যখন অন্য সংস্কৃতির প্রবেশ ঘটে তখন তাদের প্রভাবেও অনেক মন্দির স্থাপত্যের বিনাশ ঘটেছে।  ভারতীয় ইতিহাস তার প্রতিটি পৃষ্ঠাতে ফুটিয়ে তুলেছে রোমাঞ্চ, বিস্ময়, নৃশংসতা এবং বর্বরতা। এই প্রতিটি পৃষ্ঠা আমাদের মানবপটে প্রতি কোনো না কোনো বিস্ময়কর চিত্র ফুটিয়ে তুলছে। যার এক একটা কাহিনি এত মর্মান্তিক যে তা এক সম্রদায়ের পক্ষে অসহনীয় হয়ে উঠেছে। তেমনই এক ঘটনা হলো মুসলিম কর্তৃক হিন্দু মন্দির লুন্ঠন।  
ভারত নানা সময়ে নানা বৈদেশিক হানাদার দের দ্বারা আক্রান্ত হয়েছিল। যার ফলে ভারতের প্রচুর সম্পদ ভারত থেকে লুন্ঠিত সামগ্রী রূপে অন্য স্থানে স্থানান্তর হয়ে গেছল। এই লুঠতরাজ পর্বের সূচনা হয় মুসলিম হানাদার দের ভারতে হানা দেওয়ার পর থেকে। যার ফলে বিপুল পরিমাণে ভারতীয় ধনসম্পদ আরব, পারস্য, ইরাক, গজনির মতো মুসলিম প্রধান অঞ্চল গুলিতে স্থানান্তরিত হয়। বিগত ১ম খ্রীস্টাব্দ থেকে ১০০০ খ্রীস্টাব্দ পর্যন্ত ভারতের অর্থনীতি বাকি দেশ গুলোর থেকে অনেক উন্নত ছিলো। এই মুসলিম আগ্রাসনের পর থেকে ভারত তার গৌরব হারায়। 
ভারতে বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন ব্যাক্তির আগমন ঘটেছিলো। যাদের কারো উদ্দেশ্য ছিলো শিক্ষা, আবার কারোর রাষ্ট্রদূত হিসেবে ভারত ভ্রমণ। তারা এই ভ্রমণ সম্পর্কে প্রতিবেদন রচনা করেন। ভারতে প্রায় বহির্বিশ্বের সব স্থান থেকেই পর্যটন, পরিভ্রমণ করতে আসেন। তারা তাদের ভ্রমণ বৃত্তান্তে ভারতের রূপমহিমা বর্ণনা করেছেন। তারা উল্লেখ করেছেন যে ভারতের মাটিতে সোনা আর জলে রূপোর চাষ হয়, অর্থাৎ ভারত চিরকালই শস্যশ্যামলা দ্বারা পরিবৃত। এই সব বিবরণ এর পর থেকে বহির্বিশ্বের কাছে ভারত সম্পর্কে কৌতুহল বাড়তে থাকে, যার ফল স্বরূপ হানাদার রা ভারতের বুকে পা রাখে।  এই পর্বের সূচনা হয় মুসলিম দের ভারত আগমনের পর থেকে। ভারতে প্রথম মুসলিম আগমন ঘটে ৭৫৭ খ্রীষ্টাব্দে মহম্মদ বিন কাশিম এর নেতৃত্বে। এই সময় মুসলিম বাহিনী সিন্ধ অঞ্চলে নিজের প্রভাব বিস্তার করতে সক্ষম হয়েছিল। এই সময় তারা বেশ কিছু ধনসম্পদ লুঠ করে। এর পর আফগানিস্তানের পার্বত্য অঞ্চল দিয়ে ক্রমাগত মুসলিম দের আগমন ঘটতে থাকে। 
সব থেকে নৃশংস লুঠতরাজ হয়েছিল মুসলিম দের দ্বারা। চিরাচরিত হিন্দু রাজতন্ত্রের অবসান ঘটিয়ে মুসলিম আগ্রাসন। প্রথম দিকে এই মুসলিম রা স্বাধীন ভাবে বসবাস করার জন্য ভারতে আসেনি। তারা কেবল ধনভাণ্ডার লুঠ করার জন্য ভারতে আসত। এই আগ্রাসনের তীব্রতার ফলে ভারতীয় ঐতিহ্য লুন্ঠিত হয়েছিল। 
এই রকমই একজন হানাদার হলেন গজনির সুলতান মামুদ। ১০০০ খ্রীস্টাব্দ থেকে ১০২৭ খ্রীঃ এর মধ্যে ১৭ বার ভারত আক্রমণ করেন। তার এই আগমনের প্রধান উদ্দেশ্য ছিলো ভারতের সম্পদ লুঠ করা স্থায়ী ভাবে বাস করা না। তিনি উত্তর ভারতের অনেক জায়গা তে হানা দেন। তিনি ভারত থেকে প্রচুর সম্পদ লুঠ করে নিজের দেশে নিয়ে যান। তাঁর এই নৃশংসতার একটু ধারণা দেওয়া যাক— 
তুর্কিস্তান এর অন্যতম প্রধান জনপদ হলো এই গজনি। এই গজনি তে বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন রাজা শাসন করেছেন। উল্লেখযোগ্য সুলতান হলেন আলপ্তগিন, এবং এই আলপ্তগীনের মৃত্যুর পর ৯৭৭ সালে গজনির সিংহাসনে বসেন সবুক্তগীন। 
৯৯৮ সালে গজনির সিংহাসনে মামুদ আরোহন করেন। তিনি গজনিকে তার সাম্রাজ্যের রাজধানী করেছিলেন। মামুদ ২৭ বছর বয়সে সুলতান উপাধি গ্রহন করেন। এরই পর থেকে সুলতান উপাধি গ্রহনের ধারা শুরু হয়। 
মামুদের এই ভারতে হানা দেওয়ার নেপথ্যের কারণ সম্পর্কে ঐতিহাসিক ও অর্থনীতিবিদ দের মতে —
 ভারতের বিপুল ধনসম্পদ লুঠ করাই ছিল তার এক মাত্র উদ্দেশ্য। 
 তিনি ইসলাম ধর্মের সম্প্রসারণ এর উদ্দেশ্যে ভারতের মাটিতে পা দিয়েছিলেন। 
 পশ্চিম ভারতের শক্তিশালী রাজপুতদের মধ্যে ঐক্যের অভাব দেখা দিয়েছিল। তারা পরস্পর বিবাদে নিমজ্জ থাকত এই সুযোগে গজনি ভারতে প্রবেশ করেন ।
ভারতে মামুদের কর্মকাণ্ডের একটা তালিকা দেওয়া যাক— 
 মামুদ ১০০০ খ্রীঃ থেকে ১০২৭ খ্রীঃ পর্যন্ত ১৭ বার ভারত আক্রমণ করে। 
 ১০০০ খ্রীঃ প্রথম বার আক্রমণ করে বর্তমানে আফগানিস্তান এবং পাকিস্তান অঞ্চলে। 
 ১০০৫ খ্রীঃ হানা দেয় ভাটিয়া অঞ্চলে। 
 ১০০৬ খ্রীঃ মুলতানে আক্রমণ করেন। 
 ১০০৭ সালে ভাতিন্ডাতে হানা দেন। 
 ১০১১ সালে পাঞ্জাব পার্বত্য অঞ্চলে লুঠপাট চালান। 
 ১০১৩ সালে পাকিস্তান এবং পূর্ব আফগানিস্তানের বেশ কিছু অঞ্চলে। 
 ১০১৪ খ্রীস্টাব্দে থানেশ্বর শিব মন্দিরে লুঠ করে প্রায় ধংস করেন। 
 ১০১৫ সালে কাশ্মিরে আক্রমণ করেন। 
 ১০১৮ সালে মথুরা লুঠ করেন। এই সময় মথুরা উজাড় হয়ে গেছিল। 
 ১০২১ সালে কনৌজ আক্রমণ করেন। 
 ১০২৩ গোয়ালিয়র এর লুঠপাট চালান। 
 ১০২৭ সালে শেষবারের মতো আক্রমণ করেন সোমনাথ মন্দিরে। বাকি সব লুন্ঠনের থেকে এর ভয়াবহতা অনেক বেশি। সোমনাথ মন্দির ধ্বংস করেন তিনি। মন্দিরের সব ধনভাণ্ডার আত্মসাৎ করেন। সোমনাথ মন্দির তার এই বিপুল ধনসম্পদের জন্য প্রসিদ্ধ ছিল। 
 ৩দিন ধরে তিনি এই মন্দিরে লুঠ চালান। মন্দিরের সব সম্পদ লুঠ করেন। রাজপুত শক্তি তার বিরোধ করার চেষ্টা করেছিলেন। কিন্তু তারা সক্ষম হননি। প্রায় ৫হাজার হিন্দু এই বর্বরতার কারণে মারা গিয়েছিলেন। 
 তার এই লুঠ এর পরিমাণ ছিলো প্রায় ২০ মিলিয়ন দিনার, যা বাকি সব লুঠপাটের ৮গুন। তিনি শুধু লুঠ করেই ক্ষান্ত থাকতেন না। তিনি মন্দিরে কারুকার্য ধ্বংস করেন। লিঙ্গ ধ্বংস করেন। 
তিনি ভারতবাসী দের কাছে লুঠেরা হিসেবে পরিচিত হলেও তিনি ছিলেন তার রাজ্যের এক আদর্শ রাজা। তিনি এই লুন্ঠিত সম্পদ দিয়ে তার রাজধানীকে ঢেলে সাজিয়েছিলেন। গজনির শ্রী বৃদ্ধি করেছিলেন। তিনি যে শুধু ধনভাণ্ডার লুঠ করতেই ভারতে এসেছিলেন তা কিন্তু নয়। তিনি ভারতের মহল শিল্প কর্ম স্থাপত্য ভাষ্কর্য দেখে মুগ্ধ হয়েছিলেন। তাই তিনি ভারত থেকে নানা উন্নত মানের শিল্পী দের অপহরণ করে নিজের রাজ্যে নিয়ে যান নিজের রাজ্যে মহল নির্মাণ হেতু। 
 ১২০৬ সালে মহম্মদ ঘুরির নেতৃত্বে মুসলিম বাহিনী ভারতে বিজয় লাভ করে তরাইনের ২য় যুদ্ধে। মহম্মদ ঘুরিও প্রচুর পরিমানে সম্পদ লুঠ করেন। পরবর্তী কালে কুতুবউদ্দিন আইবকের দ্বারা প্রতিষ্ঠিত দাস বংস হিন্দু দের ওপর অত্যাচার চালায়। ।
ভারতে লুঠতরাজ শুরু হয় ভারতে মোঘল সাম্রাজ্যের প্রতিষ্ঠার পর থেকে। মোঘল সাম্রাজ্য হলো ভারতের ইতিহাসে সবথেকে দীর্ঘদিন ধরে চলা এক মুসলিম বংস। ইব্রাহিম লোদি কে পানিপথের প্রথম যুদ্ধে সিংহাসন চ্যুত করার পর তিনি ভারতের রাজকোষের চাবি হাতে পান। এর পর তিনি এই সম্পদের অপব্যবহার শুরু করেন। তিনি কেবল এই সম্পদ মুসলিম দের জন্য ব্যবহার করেন। বাবর তাঁর আত্মজীবনী বাবার নামাতে উল্লেখ করেন তিনি ছিলে ভগবানের দ্বারা প্রেরিত খোরসান, সমরখন্দ, মক্কার মধ্যে সবথেকে ধার্মিক ব্যাক্তি। তিনি তার সম্পত্তি সেনাবাহিনীর মধ্যে বিনিয়োগ করেন যার ফলে তার সেনাবাহিনী তে যোগ দেবার জন্য উতসাহ চরমে পৌছেছিল। 
এই সময় মন্দির গুলিকে ধ্বংস করে সেখানে মসজিদ নির্মান করার প্রবনতা দেখা দেয়। এই ক্ষেত্রে ঔরঙ্গজেব উল্লেখযোগ্য ভূমিকা পালন করেন। তিনি মথুরার মন্দির গুলি ধ্বংস করে সেখানে মসজিদ নির্মান করেন। তিনি মথুরার সম্পদ লুঠ করেন। 
এক দেশের সম্পদ লুঠ করে অন্য জায়গাতে স্থানান্তর এর পক্রিয়া মর্মান্তিক। এই লুঠ এর ফলে মোঘল সরকারের ওপর সাধারণ মানুষ আস্থা হারায়। 
এক দেশের সম্পদ লুঠ করে অন্য এক দেশ কে সমৃদ্ধ করা ফলে কি সত্যি কি সেই দেশ সমৃদ্ধ হয়? ভারতের যে পরিমান সম্পদ লুন্ঠিত হয়েছে, ওই সম্পদ যদি ভারতে থাকতো তাহলে ভারত আরও সমৃদ্ধ হতো। এছাড়াও আরও অনেক সময় হিন্দুদের বহূ মন্দির ধ্বংস করা হয়েছে। ধ্বংস করা হয়েছে ভারতের বহূ  ঐতিহ্য।

মন্দির গুলি সর্বদা সম্পদে পরিপূর্ণ থাকতো। এখানে সম্পদ বলতে হীরে মানিক ধণ দৌলত মণী মাণিক্য এই ছাড়াও সমৃদ্ধ ছিল নানা কারুকার্যের জন্য। মন্দির গুলিতে বেশি নৃত্য ভঙ্গিমায় নারী মুর্তী খোদাই করা হতো। নর্তক নর্তকী দের ছিত্র, দেবী দেবতার ছবি খোদাই করা হতো। আবার সেখানে রাজার দানশীলতা চিত্র অঙ্কিত করা হতো। আবার রাজার বীরত্বের প্রতীকী হিসেবে যুদ্ধাভিজান, রাজার মৃগয়ার চিত্র খোদাই করা হতো ছেনি হাতুড়ির সাহায্যে। এই মন্দির গুলোতে অনেক চিত্র অঙ্কিত হতো। জীবনের সাথে সামঞ্জস্য পূর্ন অনেক বিষয়ই ফুটে উঠেছে। মন্দির নির্মানের সময় দেশ বিদেশের বহূ চিত্রকর কে এনে মন্দিরে চিত্র খোদাই করা হতো। আবার যেই দেবতার মন্দির সেই দেবতার ও নানা কর্মকাণ্ড ফুটিয়ে তোলা হয়েছে। এই গুলোর একমাত্র উদ্দেশ্য ছিলো প্রজারা রাজার বিদ্রোহী না হয়ে ওঠে এর জন্যেই অনেক মন্দির নির্মান করা হতো। যদি Time table অনুযায়ী বিচার করব যায় তাহলে দেখা যাবে ১৫০০ খ্রীস্টাব্দের আগে বাংলা জুড়ে যেহারে শিব আর শক্তির আরাধনা করা হতো তখন বৈষ্ণব উপাসনার প্রসার সেই ভাবে ঘটেনি । শ্রী চৈতন্যদেবের ভক্তি আন্দোলনের পর থেকে বাংলায় এই বৈষ্ণব উপাসনার প্রসার ঘটে। তাই মন্দির গুলিতেও এই বিশেষ পার্থক্য গুলি লক্ষ্য করা যায়। তার থেকেও বিভিন্ন রাজা রাজড়ার সময়কাল পরিবর্তনেরব ছাপ লক্ষ্য করা যায়। এই রকমই একটা কলা লক্ষ্য করা যায় বিষ্ণুপুরের মন্দির গুলিতে। ওই মন্দির গুলিতে মাটির ওপর অঙ্কিত বিভিন্ন কারুকার্য খোদাই করা হতো ।একে টেরাকোটা বলে। এই টেরাকোটা শিল্পের জন্য বিষ্ণুপুর সারা বিশ্বে প্রসিদ্ধ। ভারতের চিত্রাঙ্কন শিল্পটিও বহূ প্রাচীন। যখন মানুষের মনের বিকাশ ঘটতে শুরু করে, মানুষ যখন বুঝতে শুরু করে সেই সময় থেকেই মানুষ এই আঁকাআঁকি শুরু করে। তখন মানুষ গুহার গায়ে নানা ধরণের পশু পাখি মানুষের ছবি অঙ্কিত করতো এইভাবেই চিত্রকলার বিকাশ ঘটে এবং এর দ্বারাই বাকি সব সংস্কৃতি পরিব্যাপ্ত হয়েছে। এটু প্রাচীনকাল থেকে অবিরাম চলে আসা ও পর্যায়ক্রমিক বিরতির প্রতিনিধিত্ব করে। এবং চিত্রশিল্পের সাথে বাকি অন্য সব সংস্কৃতি অঙ্গাঙ্গিক ভাবে জড়িত। মানব সভ্যতার সূচনালগ্ন থেকে মানব সভ্যতার আজ পর্যন্ত ধারার অন্যতম চালিকা শক্তি এই চিত্রকলা। বিংশ শতকের গোড়ার দিকে এই চিত্রশিল্প মূলত সমাজজীবন, প্রতিনিধিত্বমূলক, ধর্মবিশ্বাস তথা ধ্রপদীয় ধারার বাহক হিসেবে ছিল পরবর্তীকালে আরও বিশুদ্ধ বিমূর্ত এবং ধারণাগত পদ্ধতি প্রাধান্য পেয়েছিল। প্রাচ্যশিল্পকলার বিকাশকাল পাশ্চাত্য শিল্পকলার বিকাশকাল সমসাময়িক হলেও প্রাচ্য শিল্প অনেক প্রাচীন। আফ্রিকার শিল্প, ইহুদীয় শিল্প, ইশলামীয় শিল্প, ভারতীয় শিল্পকলা, চীনা শিল্প এবং জাপানি শিল্প প্রত্যেকেরই পশ্চিমা শিল্পের উপর তাৎপর্যপূর্ণ মিল লক্ষ্য করা যায়। প্রথমদিকে উপযোগী উদ্দেশ্যে এবং সাম্রাজ্যবাদী, বেসরকারি, সাধারণ নাগরিক এবং ধর্মিয় পৃষ্ঠপোষকতা প্রদর্শন করলেও, পূর্ব এবং পাশ্চাত্য চিত্রকলা পরে অভিজাত ও ধণী পরিবারের পৃষ্ঠপোষকতা পেয়েছিল। আধুনিক যুগ থেকে মধ্যযুগ ও পরে রেনেসাঁস সময়কালে চিত্রকরেরা চার্চ এবং ধণী অভিজাতদের জন্য কাজ করতো। রেনেসাঁস পরবর্তী যুগের সমাজচিন্তা জানার জন্য অতি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান হলো এই চিত্রকলা। চিত্রকরের দৃষ্টিভঙ্গি তার কাজের মধ্যে ফুটে উঠেছে। তখনকার চিত্রকররা মূলত সমাজকেন্দ্রিক চিত্র বেশি প্রতিফলিত করতো। আবার অনেক শাসক চিত্রকরদের দিয়ে নিজের প্রতিকৃতি অঙ্কন করাতেন। চিত্রকলার আদিকাল বলতে বোঝায় প্রাগৈতিহাসিক যুগে নিয়ান্ডারথালদের অঙ্কিত গুহাচিত্র, যার আনুমানিক বয়স ৪০০০০ বছর। ফ্রান্সের চৌভেট গুহায় পাওয়া ছবিগুলি প্রায় ৩২০০ বছর পুরোনো। ভারতের ভীমবাটিকা তে একইরকম গুহাচিত্রের প্রমান পাওয়া যায়। পরবর্তী সময়ে এই চিত্রকলা দুটিভাগে বিভাজিত হয়েযায়, প্রাচ্যরীতি আর পাশ্চাত্যরীতি। প্রাচ্য চিত্রশিল্পের ইতিহাসে বিভিন্ন সংস্কৃতি এবং ধর্মের বিস্তৃত প্রভাব রয়েছে। প্রাচীন ভারতীয় শিল্পকলা বিশ্বের অন্যতম প্রাচীন বহমান শৈল্পিক ঐতিহ্য। প্রথম দিকে এটি প্রতিনিধিত্বমূলক না হলেও আলঙ্কারিক ছিল। এই গুলিতে চিত্রের পরিবর্তে কারুকার্য নকশা র পরিমাণ ছিলো অনেক বেশি। প্রাথমিক মৃৎশিল্প গুলিতে সর্পিল, আঁকাবাঁকা সর্পিল, বিন্দু বা প্রাণী আঁকা ছিলো। যুদ্ধবাজ রাজ্য গুলির সময়কাল থেকে (অর্থ্যাৎ ৪০৩ থেকে ২২১ খ্রীস্টপূর্ব) শিল্পীরা তাদের চারপাশের বিশ্বকে উপস্থাপন করতে শুরু করে, যুদ্ধাভিজান রাজার প্রভাব আর প্রভাবে জর্জরিত প্রজাদের চিত্র অঙ্কিত করতো। খ্রীস্টপূর্ব ৬ঠ শতকের ছবি গুলো থেকে আমরা মগধের উত্থানের কথা জানতে পারি। খ্রীস্টপূর্ব চতুর্থ শতকে অশোকের নানা সমাজ সংস্কারমূলক বৃত্তান্তের চিত্র অঙ্কিত হয়েছে। এই চিত্রগুলিই ইতিহাস রচনার ক্ষেত্রে জীবন্ত দলিল হিসেবে কাজ করে। প্রাচীন ভারতীয় এই চিত্রকলার অনেকগুলো ধারা প্রচলিত ছিলো। যাদের মধ্যে অতি প্রাচীনতম হলো মন্ডলা আর প্রাচ্য পাশ্চাত্যের মিলনে গড়ে ওঠা ডুডুল আর্ট। এছাড়াও আলপনাও অনেক পুরোনো সনাতন ধর্মের সূচনা থেকে কোনো শুভ কাজে আলপনা দেওয়ার প্রথা চলে আসছে। এক্ষেত্রে আলপনা শ্রীর প্রতীক। তাই প্রাচীন ভারতীয় এই সব শিল্পকলা সভ্যতার প্রতিটি বিষয়ে অন্তর্নিহিত। এছাড়াও  উপজাতিরা তাদের গৃহসজ্জার খাতিরে একপ্রকার চিত্রশৈলী অঙ্কন করেন। যার ধারা বর্তমানেও অব্যাহত রয়েছে। প্রাচীন দক্ষিনভারতীয় মন্দির গুলিতে মন্ডলা চিত্রকলার দৃষ্টান্ত লক্ষ্য করা যায়। এছাড়াও রাজা বাদশাদের Portraits অঙ্কনেরও চল ছিলো। তাহলে অন্তিমে বলাই যায় যে প্রাচীন ভারতীয় সভত্যা যদি একটা বটবৃক্ষের হয় তাহলে স্থাপত্য, ভাষ্কর্য, শিল্পকলা, চিত্রশিল্প প্রত্যেকটা তার শাখাপ্রশাখা এবং ঐতিহ্য সংস্কার শৈল্পীকতা তার শিকড় যা আমাদের মানসিক চিন্তার অতিগভীরে প্রথিত অবস্থায় আছে। আর আমাদের এই সভ্যতা তার ছত্রছায়ায় নিজের জীবন অতিবাহিত করছি। আর বর্তমানেই আমরা এই বটবৃক্ষের ছায়া থেকে অনেক দূরে সরে যাচ্ছি। 

গ্রন্থপঞ্জী সহায়ক চিত্রপঞ্জী :
১) A study on Hindu Temple Planning Construction and The Vastu. By Sujatavni Gunasagaran. 
২) content://com.android.chrome.FileProvider/offline-cache/d1624c69-721a-4782-b0e6-b080db4b32c7.mhtml.
৩)  https://en.wikipedia.org/wiki/Hindu_temple_architecture.
৪)  চিত্রকর সুস্মিতা ভট্টাচার্যের আঁকা কিছু চিত্র। 
৫)  বিষ্ণুপূরের টেরাকোটা শিল্পের নিদর্শন। 
Tags: The Indian Rover
Previous Post

বাংলা ভাষা – সৌভিক রাজ

Next Post

আমার প্রাণের ভাষা – সৌভিক রাজ

Next Post
edit post

আমার প্রাণের ভাষা - সৌভিক রাজ

Please login to join discussion

Categories

  • Privacy Policy
  • Terms and Conditions
  • Disclaimer for The Indian Rover
  • Sitemap
  • Follow us on

© 2022 JNews - Premium WordPress news & magazine theme by Jegtheme.

No Result
View All Result
  • Home
  • Archives
    • Archives
    • The Indian Rover ( Issue: December, 2022)
    • The Indian Rover (Issue: October, 2022)
    • The Indian Rover (Issue: June, 2022)
    • The Indian Rover (Issue: March, 2022)
    • The Indian Rover (Issue: December, 2021)
    • The Indian Rover (Issue: November, 2021)
    • The Indian Rover (Issue: October, 2021)
    • The Indian Rover (Issue: September, 2021)
    • The Indian Rover (Issue: August, 2021)
    • The Indian Rover (Issue: July, 2021)
    • The Indian Rover (Issue: June, 2021)​
    • The Indian Rover (Issue: May, 2021)
    • The Indian Rover (Issue: April, 2021)
    • The Indian Rover (Issue: March, 2021)
    • The Indian Rover (Issue: Feb, 2021)
    • The Indian Rover (Issue: Jan, 2021)
  • Categories
    • Finance
    • Science
    • Sports
    • Non Fiction
  • About
  • Contact Us
  • Submit Guest Post
    • Login
    • Account
    • Dashboard
  • Announcement

© 2022 JNews - Premium WordPress news & magazine theme by Jegtheme.

Welcome Back!

Login to your account below

Forgotten Password?

Retrieve your password

Please enter your username or email address to reset your password.

Log In