শারদ-সুন্দরী - প্রতিত কুমার মল্লিক
নীল–আকাশে বেড়ায় ভেসে–সাদা মেঘের ভেলা,
শরত সমীরে দোল খেলে যায় কাশের বনের মেলা।
ভোরের শিশির মুক্ত হয়ে ছড়িয়ে আছে ঘাসে,
হিমের পরশ ঢেউ দিয়ে যায় শরতের বাতাসে।
সরমীর জলে শতদল-বনে ফুটেছে কমলিকা,
মাটির আঁচলে ঝরেছে শিশির-সিক্ত শেফালিকা।
সবুজ ‘বনানী’ নবারুণ লালে রাঙিয়ে নিয়েছি শাখা,
শরত-আলোয় ভুবন মোহিনীর ‘সুন্দরী’ হয়ে থাকা।
আকাশ বাতাস মুখরিত হয়ে আগমনীর সুরে –
নিঝুম দুপুরে সেই সুর ভাসে দূর থেকে বহুদূরে!
শরত রানির শারদ-মহিমায় ভরে ওঠে ধরণী,
‘আনন্দ ধারা’ আনে অন্তরে মা- ‘দুর্গা’– জননী।
শরত বানীর বীণা বাজে আজ বাঙালির ঘরে ঘরে,
গৃহবধূরা পূজার ডালি সাজায়েছে থরে থরে।
নতুন বেশে ভূষিত হয়েছে আবাল–বনিতে–বৃদ্ধা।
অমল রূপের সুষমা লয়ে ধরণী হ’ল যে ঋদ্ধা ।
মানব–হৃদয় উৎসবে মেতে হয়েছে আত্মহারা,
আনন্দে- আজ বয়ে চলে যেন জীবনের নব ধারা।
ঢাক–ঢোল–কাঁসর বাজে, বাজে শঙ্খধ্বনি,–
শরতের আকাশ থেকে ওঠে জয়ধ্বনি।